পর্যটন একটি বহুমাত্রিক ও দ্রুত বর্ধনশীল শিল্প। প্রাগৈতিহাসিককাল থেকে মানুষ ভ্রমণের সহজাত নেশায় দেশ হতে দেশান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছে। গত অর্ধশতক জুড়ে বিশ^ব্যাপী অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে একটি ক্রিয়াশীল শক্তি হিসেবে পর্যটনের বিকাশ ঘটেছে এবং পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ পৃথিবীর একটি অন্যতম বৃহৎ ব—দ্বীপ এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ পর্যটন সম্ভাবনাময় দেশ। পৃথিবীর দীর্ঘতম নিরবচ্ছিন্ন বালুকাময় সমুদ্র সৈকত, একক সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, নৈসর্গিক সৌন্দর্যমণ্ডিত চা বাগান, দিগন্তবিস্তৃত হাওড়—বাঁওড়, ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা, ঐতিহ্যবাহী লোকজ উৎসব ও লোক শিল্প, ক্ষুদ্র নৃ—গোষ্ঠীর বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি ইত্যাদি দেশি—বিদেশি পর্যটকদের নিকট বাংলাদেশকে করেছে আকর্ষণীয় ও সম্ভাবনাময় পর্যটন স্থানে। সারাবিশে^র ন্যায় বাংলাদেশ ও কর্মসংস্থান ও আয়বর্ধনে এই বহুমাত্রিক পর্যটন ও সেবা শিল্প বিশাল ভূমিকা পালন করতে পারে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, ২০১০ সালে জাতীয় পর্যটন নীতিমালা ও ২০১৩ সালে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ট্যুরিস্ট পুলিশ গঠিত হয়।
ট্যুরিস্ট পুলিশের গঠন
পর্যটন শিল্প বিকাশে অন্যতম প্রধান শর্ত ট্যুরিজম সিকিউরিটি। পর্যটন শিল্পকে নিরাপত্তা ও সুরক্ষার চাদরে আবৃত করে দেশের সমৃদ্ধ অর্জনের লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ২০১০ সালে জাতীয় পর্যটন নীতিমালা ঘোষণা করে। নীতিমালার ৬.৯ অনুচ্ছেদে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ট্যুরিস্ট স্পটসমূহে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি স্থানভেদে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদিসহ প্রশিক্ষিত উদ্ধারকর্মী নিয়োজিতকরণের কথা উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে ট্যুরিজম সিকিউরিটি নিশ্চিতকল্পে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালের ৬ নভেম্বর ‘ট্যুরিস্ট পুলিশ’ নামে বাংলাদেশ পুলিশের একটি বিশেষায়িত ইউনিট গঠন করা হয়। ৩ জুন ২০২০ খ্রি. তারিখে ট্যুরিস্ট পুলিশের বিধি গেজেট আকারে জারি হয়। বাংলাদেশকে পর্যটকদের জন্য একটি নিরাপদ গন্তব্যে পরিণত করা ও পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে শুরু থেকেই ট্যুরিস্ট পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।